লক্ষ্য যখন কার্জন......

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


ঢাবির লাল বাস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় নয় একটি জাতির আবেগ,আকাঙ্ক্ষা,সংস্কৃ­তি,ইতিহাস সব কিছুই জড়িয়ে আছে।দেশের সবচেয়ে প্রচীন এ বিশ্ববিদ্যালয় টি শুধু একটি জাতিকে তৈরী ই করেনি তাদের দিয়েছে স্বাধীনতা,ভাষা,শিক্ষা­,সব।সব কিছুই মূলেই রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ থেকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা লাল ইটের কার্জন সেটার ই পরিচিয় দেয়।টিএসই,দোয়েলচত্বর­,মলচত্বর দিয়ে ঘেরা এই বিদ্যানিকেতন বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।

কেন পড়বঃ

বিজয়ের সাজে কার্জন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে অনেক অনুষদ,বিভাগ,সাবজেক্ট।বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এত সাবজেক্ট নেই,এত ছাত্র নেই। যদি তুমি বিঞ্জান বিভাগের সাব্জেক্ট এ পড়তে চাও তাহলে "ক" ইউনিট তোমার প্রথম পছন্দে থাকবে। কারন বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন‍্য সর্বাধিক সংখ‍্যক সাবজেক্ট অধ‍্যয়নের সুযোগ রয়েছে ঢাকা বিশ্বব‍িদ‍্যালয়ের ক-ইউনিটে। এ বিশ্ববিদ‍্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, ফার্মেসি, মাইক্রোবায়োলজি, ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক‍্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োকেমিস্ট্রির মতো সাবজেক্টগুলোর চাহিদা দেশের চাকুরীর বাজারে বেশ আকাশচুম্বী।
বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষিত সম্প্রদায়ের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি পদক লাভ করেছেন। এছাড়াও, এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এশিয়কের পক্ষ থেকে শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নেয়। তোমার ইচ্ছে করেনা ঢাবির লাল বাসে চড়তে??ইচ্ছে করেনা  শেখ মুজিবুর রহমান, নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস,রাস্ট্রপতি আবদুল হামিদ,বুদ্ধদেব বসু,সত্যেন বোস,শেখ হাসিনা,হূমায়ন আহম্মেদ,জাফর ইকবাল সহ অসংখ্য লিজেঞ্জ ,যে পথে হেটেছেন,সে পথে হাটতে,তারা যে ক্লাস রুমে বসে ক্লাস করতেন ,সেখানে ,সেই লাল কার্জনে ক্লাস করতে,তারা যে হলের গুন্রুমে থাকতেন সেই গনরুমে থাকতে।তোমার কি ইচ্চে করে পহেলা বৈশাখে চারুকলার দেশের সবচেয়ে বড় মংগল শোভাযাত্রার আংশ নিতে??ইচ্ছে করে তো টিএসইর ভেলপুরি খেতে??হাকিমের খিচুড়ী খেতে,মধুর ক্যান্টিনে খেতে??,১ টাকার বিখ্যাত চা খেতে,তাইলে তুমি সঠিক পথেই আছ। হ্যা ঢাবি তোমার জন্যই।তোমার ই অপেক্ষাই ঢাবির গনরুম লাল বাস,ই লাইব্রেরী,দরকার কিছু পরিশ্রম ধৈর্য,অধ্যাবসায়।
লাল কার্জন


ফর্ম উঠানোর যোগ্যতাঃ

খুব বেশি যোগ্যতা দরকার নেই ঢাবির ফর্ম উঠানোর জন্য।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদনপত্রের জন্য ২০১৭ সালে এইচ এস সি এবং ২০১৪ অথবা ২০১৩ তে এসএস সি পরীক্ষাতে পাশ ছাড়া এইচএসসি এবং এসএসসি এই দুই পরীক্ষা মিলিয়ে পেতে হবে ন্যূনতম জিপিএ ৮। তাহলেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ সম্ভব।

ফর্ম উঠানো থেকে ভর্তি পরীক্ষাঃ

কিছুদিনের ভেতর ই ঢাবির সার্কুলার ছাড়বে।সার্কুলার অনুসারে তোমাদের অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করতে হবে।ফর্ম ফিলাপের ক্ষেত্রে ছবির বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার।ছবি যদি ভুল করে অন্যটা আপলোড হয়ে যায় তবে ঢাকা গিয়ে সেটা সংশধন করে নিয়ে আসতে হবে। ফর্ম ফিলাপ হয়ে গেলে একটা পে স্লিপ দিবে পে স্লিপ নিয়ে ৩৫০ টাকা ( গতবছরে ছিল) জনতা/সোনালী/রূপালী/­অগ্রনী ব্যাংক এর যেকোন শাখায় জমা দিতে হবে।তোমার কাজ শেষ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরীক্ষার আগেই এডমিট পাবে। আর সিট প্যান ও জানতে পারবে ঢাবি ওয়েবসাইট থেকে। প্রশ্ন গুজবে কান দেবেনা। এরপর তোমার এক্সাম চলে আসবে,এক্সামের জন্য ঢাকার বাহিরের ছাত্র ছাত্রীদের ঢাকায় আসতে হবে।পুরো ঢাকা জুড়েই বিভিন্ন কেন্দ্রে এক্সাম হবে।সাধারণত শ্রুক্রবারেই এক্সাম হওয়াতে জ্যামের অত ভয় থাকেনা তবুও শাহাবাগ থেকে দোয়েল চত্তর হয়ে নিউমার্কেট রোডে জ্যাম থাকবেই।এজন্য সময় নিয়ে বের হওয়া ভাল। সময় মত হলে উপস্তিত হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে পরীক্ষা দিবে।কখনো এক্সাম হলে গিয়ে মনে করবানা যে ঢাবি তে আমার চান্স পেতেই হবে। এটা মনে করবা যে দূর হালা ঢাবিতে না হলে কি হবে আরো ৩০ টা পাবলিক ভার্সিটি বসে আছে আমার জন্য।তাইলে তুমি কুললি এক্সাম দিতে পারবা।আর ভাগ্য যদি ভাল হয় তোমার জীবনসংগীনি ও পেয়ে যেতে পার। :P অনেক এরকম দেখছি ভর্তির পর দুজনের পার্মানেন্ট সেটাপ হয়ে যায় :P । আর বের হওয়ার পর অনেক মহাঞ্জানীরা তোমার পাশে দিয়ে অনেক ভাব নিয়ে বের হবে, কেউ বলবে আমার ৯০ টা হইছ কেই বলবে আমার ১০০ টা হইছে, সেখানে মহাঞ্জানীদের কথায় বিচলিত হওয়ার কিছুই নেই,আসল সত্য হচ্ছে তাদের ৯০ বা ১০০ টাই ভুল হয়।প্রশ্ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে মিলিয়ে, রাস্তার ভিড় আর বাড়াবেনা, সোজা বাসার পথ ধরবে,লাঞ্চ করেই। সেদিন ই বিকেলে থাকবে জগন্নাথের পরীক্ষা। (কয়েকবছর ধরেই এটা হয়ে আসতেছে।) পরীক্ষার ২/৩ দিনের মাথায় রেজাল্ট পাবলিশ হবে।

পরীক্ষার মান বন্টনঃ

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন থাকে ছয়টি বিষয়ে। এর মধ্যে উত্তর করতে হবে চারটির। রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান বাধ্যতামূলক। যারা চতুর্থ বিষয় হিসেবে গণিত অথবা জীববিজ্ঞান পড়েছ, তারা এর যেকোনো একটি বাদ দিয়ে ইংরেজি অথবা বাংলার উত্তর করতে পারো। ইচ্ছা করলে জীববিজ্ঞান ও গণিতেরও উত্তর দিতে পারো। মোট ১২০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, প্রতিটির নম্বর সমান। বিগত বছরের প্রশ্ন নিয়মিত চর্চা করতে হবে। ঘরে বসেই অংশ নিতে পারো মডেল টেস্টে। এতে নিজেকে যাচাই করার একটা সুযোগ পাওয়া যায়।

প্রস্তুতিঃ 

এইবার আসো আসল জিনিসে এই কিছু করে কিছুই লাভ হবেনা ,অই একবার ঢাবি দেখে নীরস বদনে ফিরে যেতে হবে। তোমাদের সুবিধার্থে পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ে দরকারি পরামর্শ দিয়েছেন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ‘ক’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম নাবিল ইবতেহাজ

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন থাকে ছয়টি বিষয়ে। এর মধ্যে উত্তর করতে হবে চারটির। রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান বাধ্যতামূলক। যারা চতুর্থ বিষয় হিসেবে গণিত অথবা জীববিজ্ঞান পড়েছ, তারা এর যেকোনো একটি বাদ দিয়ে ইংরেজি অথবা বাংলার উত্তর করতে পারো। ইচ্ছা করলে জীববিজ্ঞান ও গণিতেরও উত্তর দিতে পারো। মোট ১২০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, প্রতিটির নম্বর সমান। বিগত বছরের প্রশ্ন নিয়মিত চর্চা করতে হবে। ঘরে বসেই অংশ নিতে পারো মডেল টেস্টে। এতে নিজেকে যাচাই করার একটা সুযোগ পাওয়া যায়।

পদার্থবিজ্ঞান  

পদার্থবিজ্ঞানে গাণিতিক ও তাত্ত্বিক- উভয় ধরনের প্রশ্নই করা হয়ে থাকে। তবে গাণিতিক প্রশ্ন সংখ্যায় বেশি আসে বলে অঙ্কে আলাদা নজর দিতে হবে। গাণিতিক প্রশ্নের সমাধানের জন্য প্রতিটি সূত্র এমনভাবে পড়তে হবে, যাতে পরীক্ষার হলে আর চিন্তা করে বের করতে না হয়। সমীকরণগুলো ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। তাত্ত্বিক অংশ থেকে সাধারণত তিন থেকে চারটি প্রশ্ন থাকে। তার পরও এর জন্য প্রতিটি অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় প্রতিবছরই পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কিত সাম্প্রতিক ঘটনাবলি থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে। এ জন্য পড়তে হবে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী।


রসায়ন

 গাণিতিক ও তাত্ত্বিক প্রশ্ন প্রায় সমানুপাতিক হারে আসে রসায়নে। গাণিতিক অংশে ভালো করার জন্য বিভিন্ন একক ও সংকেত ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। তাত্ত্বিক অংশের জন্য যোজনী, বিক্রিয়া, ভর, তুল্য সংখ্যা, সংকেতসহ সব অধ্যায় মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো বুঝে পড়তে হবে। রসায়নের ক্ষেত্রে ভুল উত্তর ও সঠিক উত্তরের মধ্যে পার্থক্য খুব কম থাকে। তাই সতর্ক থাকতে হবে উত্তর করার সময়। বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে প্রয়োগে ভুল না হয়


জীববিজ্ঞান 

জীববিজ্ঞানে প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র থেকে সাধারণত সমানসংখ্যক প্রশ্ন থাকে। এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলনামূলক সহজ হয়। প্রতিটি অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসে বলে কোনো কিছুই বাদ দেওয়া যাবে না। মানবদেহ থেকে তুলনামূলক কম প্রশ্ন হয় বলে অবজ্ঞা করা যাবে না। তুলনামূলক সহজ ভেবে কোনো অধ্যায় না পড়লে তা থেকে প্রশ্ন এলে উত্তর পারা যাবে না। তাই সব অধ্যায় পড়তে হবে। বৈজ্ঞানিক নাম, শ্রেণিবিন্যাস বেশি বেশি পড়তে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য বইয়ের পড়াই যথেষ্ট। বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে হুবহু না হলেও একই নিয়মে সাধারণত ৭০-৮০ শতাংশ প্রশ্ন কমন পড়ে।

বাংলা 


বিগত বছরগুলোতে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রায় সমানসংখ্যক প্রশ্ন এসেছে। প্রথম পত্রের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশেষ করে কবিতার লাইন, কবি ও লেখক পরিচিতি এবং গল্প ও কবিতার উৎস, গল্পের উপজীব্য বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে। ব্যাকরণ অংশের প্রস্তুতির জন্য নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড নির্ধারিত বইটি বেশ কাজে দেবে। ব্যাকরণ অংশের অধিকাংশ প্রশ্ন সাধারণত এখান থেকেই হয়ে থাকে। বাজারে প্রচলিত যেকোনো ভালোমানের বই সহায়ক হতে পারে। বাদ দেওয়া যাবে না বিরচন অংশও।

ইংরেজি 


সাধারণত গ্রামার থেকেই বেশি প্রশ্ন করা হয় ইংরেজিতে। গ্রামারে ভালো দখল থাকলে এ বিষয়ে ভালো নম্বর তোলা সহজ। শব্দভিত্তিক অর্থাৎ vocabulary, synonym, antonym থেকেও অনেক প্রশ্ন হয়। এ জন্য নিয়মিত নতুন নতুন শব্দ শিখে শব্দভাণ্ডার বাড়াতে হবে। বিশেষ করে বোর্ড নির্ধারিত বইয়ের কঠিন কঠিন শব্দগুলো আয়ত্তে আনতে হবে। শব্দভিত্তিক ও ব্যাকরণ উভয় ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রেই ভালো করার জন্য নিয়মিত অনুশীলনের বিকল্প নেই। বিগত বছরের প্রশ্ন দেখলে প্রশ্নের ধারা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে


আচ্ছা ভাইয়ারা এখন থাক। পরের ব্লগে আবার কোন ভার্সিটি নিয়ে কথা হবে আর তোমাদের প্রস্তুতি কেমন তা কমেন্ট বক্সে জানাও কোন কিছু জানার থাকলেও কমেন্ট করতে পার।








Comments

  1. আচ্ছা ভাইয়া চান্স পাওয়ার জন্য কত পাইতে হবে মিনিমাম।��

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভাইয়া চান্সের জন সেরকম কোন মিনিমাম স্কোর দিয়ে হয়না একেক বার একেক রকম লাগে ।তবে ৬৫+ পাইলে আশা থাকে

      Delete
  2. Accha bhai DU admission'e main xm'er sathe GoldenA+ or A+'er koto number add hoi...?

    ReplyDelete
    Replies
    1. হ্যা ভাইয়া আছে ৮০ নাম্বার আছে HSC আর SSC পরীক্ষার গ্রেড মিলে ।তবে এক্ষেত্রে গোল্ডেন থাকার পর ও একজন যা পাবে সাধারন a+ পেয়েও অই একই মার্ক্স পাবে।তোমার যদি দুইটাতেই শুধু a+(not golden) থাকে তাহলেই তুমি ৮০ পাবা

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

বুয়েট একটি স্বপ্ন ও তার প্রস্তুতি।

ঢাবি চান্স ও একটি হিসাব