বুয়েট একটি স্বপ্ন ও তার প্রস্তুতি।


বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট)
বুয়েট ক্যাম্পাস



কেন পড়বঃ
বুয়েট কি যে আমাকে সেখানে পড়তেই হবে।বুয়েটে পড়তে হলে সেটা আগে জানা দরকার। যদি তোমার স্বপ্ন থাকে একজন ইঞ্জিনিয়ার হবার, তাহলে অবশ্যই তোমার স্বপ্নের পরিধির একটা বড় জায়গা জুড়ে থাকে বুয়েট। শুধু কি একজন ভালো ইঞ্জিনিয়ার হবার জন্য? মোটেও না!
বুয়েটে পড়লে তুমি পাবে সফলময় ভবিষ্যতের সাথে বোনাস হিসেবে মজাদার এক ক্যাম্পাস লাইফ।আছে হল লাইফ,হাজার হাজার ফেস্টিভাল, আছে সিনিয়র দের অনুপ্রেরনা,আছে  বিশ্বমানের ল্যাব,ফ্যাকাল্টি,অনেক গুলো সক্রিয় ক্লাব।ফজলুর রহমান খান, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, আইনুন নিশাত, ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, আনিসুল হক, মুনির হাসান স্যারদের মত বড় মাপের মানুষরা যে রাস্তায় একসময় হেঁটেছেন বা হাঁটছেন, তুমিও হতে পারো তাঁদের উত্তরসূরী!তাইলে দেরি কেন আজ ই আদা জল খেয়ে লেগে পড় স্বপ্নের বুয়েটের জন্য জন্য, বুয়েট তোমার ই অপক্ষায়। 
আহসানুল্লাহ হল ফেস্ট ২০১৬
ভর্তী পরীক্ষা ও যোগ্যতাঃ 
শুধু বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন থাকলেই হবেনা ।দরকার কঠিন পরিশ্রম ও অধ্যাবসায় ।তাহলেই তুমি স্বপ্নের চূড়াই উঠতে পারবে।কারন বুয়েটে ভর্তির জন্য তুমুল প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা পেরিয়ে আসতে হয়। এই পররীক্ষার দুইটি ধাপ রয়েছে
                     ১)বাছায়করন অংশ ।
                      ২)লিখিত পরীক্ষা ।

বাছায়করন অংশঃ 
এটা একটা বড় আভিশাপ যে বুয়েটের সপ্ন সাইন্স পড়ুয়া সবার মনে,প্রানে অন্তরে থাকলেও সবায় বুয়েটের ভর্তি পরিক্ষার জন্য বিবেচিত হয়না।কারনটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ,বুয়েট তার ক্যাম্পাসের বাহিরে ভর্তি পরিক্ষা নেয়না।
যদি তুমি ২০১৭ সালে এইচ এ সি পরক্ষা এবং ২০১৪/২০১৫ সালে এস এস সি দাও তবেই এবার বুয়েট এ অংশগ্রহন করতে পারবে। 
তুমি যদি H.S.C পরীক্ষাই একটা নিদিষ্ট জিপিএ তুলতে পার ,তবেই তুমি বুয়েটের ফর্ম তুলতে পারবেএই জিপিএ প্রতিবার বুয়েট H.S.C রেজাল্ট বের হওয়ার পর সার্কুলার প্রকাশ করে বলে দেয়।
২০১৬ সালে এই নিয়ম টা ঠিক এরকম ছিল.
subject
reuqired G.P.A
chymistry
5.00
Math
5.00
English && Bangla
4.00
physics
5.00
                         




লিখিত পরীক্ষাঃ 
আবেদনের ১৫/২০ দিনের মদ্ধে বুয়েট লিখিত ভর্তি পররীক্ষায় বিবেচিত ৮৫০০ জনের তালিকা প্রকাশ করে ।কারন বুয়েট ক্যাম্পাশে ৮৫০০ জনের পররীক্ষা সুষ্টু ভাবে নেওয়া সম্ভব। এরপর একটি নিদিষ্ট তারিখে পরিক্ষা হয়। বুয়েট ভর্তি পরিক্ষা এত নিরাপত্তার আর সুশৃংখল  ভাবে নেওয়া হয় যে এখানে জালিয়াতির/প্রক্সির কোন কোন সুযোগ নেই।সেখানে প্রস্ন পেলেই তুমি দেখবে গরম গরম প্রশ্ন :P কারন পরীক্ষার ৫/১০ মিনিট আগেই তা প্রিন্ট করা হয় আর কোন প্রশ্ন দিয়ে পররীক্ষা হবে সেটা ৫ মিনিট আগেই ঠিক করা হয়। আর তোমার প্রবেশ পত্রের ছবির সংগে তোমার চেহার মিল গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করা হবে :P ।বুয়েটের স্যারদের এ ব্যাপারে কোন জুড়ি নেই। তুমি শেভ করা পিক দিছ এডমিটে আর তুমি দাড়ি রেখে গেলে এক্সামে তখন  তোমায় ৫/৭ মিনিট স্যারেরা পর্যবেক্ষন করবেন।আমার একজন friend  এর র রকম অবস্থা হয়েছিল। তো লিখিত পরীক্ষায় কেমন প্রশ্ন হয়? আর তার মানবন্টন ই বা কি??
মানবন্টনঃ

           বিষয় --------------------  মার্ক

  পদার্থবিঞ্জান-------------------- ২০০
            রসায়ন ------------------- ২০০
উচ্চতর গনিত  -------------------২০০

প্রতিটি বিষয়ে  ২০ টি করে প্রশ্ন থাকবে .তবে ৬০০ এর ভেতর মোটামুটি ৩৫০+ সঠিক এন্সার করলেই তোমার চান্স হবার কথা। প্রশ্ন H.S.C সিলেবাস থেকেই করা হয়। তবে ২/৩ টা অতিরিক্ত কঠিন হতেই পারে সেগুলোতে হাত দেওয়ার কোন দরকার নেই।সহজ গুলোর উত্তর যত সম্ভব করে গান গাইতে গাইতে হল থেকে চলে আসবা। কোন চাপ নেওয়ার দরকার নাই।চাপ নিলেই তুমি তোমার পুরোটা দিতে পারবানা।


শিক্ষার্থীদের প্রধান আগ্রহের বুয়েট ভর্তি প্রস্তুতি নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ২০১৪ সালের বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম অনিক সরকার।সেটি এখানে তুলে ধরা হল 
অনিক সরকার

কোনো সন্দেহ নেই বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সব থেকে বড় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী অক্টোবরের ১০ বা ১৭ তারিখে। সে হিসেবে এখনো হাতে আছে মাস দুয়েক সময়। মনে রাখবে, এই সময়টা কিন্তু অত্যন্ত স্বল্প। তাই যতটা সম্ভব সেই সময়কে তোমাদের সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে।
২০১৪ সালের অর্থাৎ গতবারের বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা হবে মোট ৬০০ নম্বরের। মোট ৬০টি লিখিত প্রশ্ন থাকবে, যেখানে প্রতিটি প্রশ্নের মান ১০ করে। এই ৬০টি লিখিত প্রশ্নের মধ্যে ২০টি করে প্রশ্ন থাকবে গণিত, পদার্থ ও রসায়ন থেকে।
পদার্থবিজ্ঞান: পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বলব, বইয়ের প্রতিটি তত্ত্ব ও সূত্রের প্রমাণ মনোযোগ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করা উচিত। বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধানের ক্ষেত্রে আমি দেখেছি, পদার্থবিজ্ঞানে প্রায়ই এমন কিছু সমস্যা দিতে দেখা যায়, যেখানে কিনা একই সঙ্গে দু-তিনটি সূত্র প্রয়োগ করে নতুন একটি সূত্রের মাধ্যমে অঙ্ক করতে হয়। তাই এ ক্ষেত্রে আমি বিশেষভাবে বলব, সূত্র একবারে মুখস্থ না করে প্রতিটি সূত্রের স্টেপ বাই স্টেপ বোঝার চেষ্টা করো। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে সমস্যার সমাধান করে যাও। তবে খুব কঠিন সমাধানগুলো নিয়ে বসে না থেকে বইতে যে সমস্যাগুলো আছে, আগে সেগুলোই নিয়মিত চর্চা করো। আর যখনই যে সমস্যার সমাধান করবে, কনসেপ্ট পরিষ্কার রেখে সমাধান করবে। যে বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত তা হলো: ভেক্টর, দ্বিমাত্রিক গতি, মহাকর্ষ, শব্দের বেগ, পৃষ্ঠটান, তুল্য রোধ (বিশেষত শর্ট সার্কিটসহ সমস্যা), তড়িৎ প্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া, আলোর প্রতিসরণ ও প্রিজম।
গণিত: আমার মতে ভর্তি পরীক্ষায় এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন সমাধানের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই বিভাগেই সব থেকে বৈচিত্র্যময় এবং অপ্রত্যাশিত প্রশ্ন বেশি আসে। তাই এ ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বেশ বেশি চর্চা করা উচিত। আমার মতে, গণিতে অবশ্যই একটু বেশি সময় দেবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে নিচেরগুলো ভালো করে চর্চা করলে তা কাজে দেবে। •Integration, Probability, Limit, বিন্যাস-সমাবেশ, জটিল সংখ্যার আর্গুমেন্ট, স্থিতিবিদ্যা (বিশেষত লামির উপপাদ্য ও বল ত্রিভুজ-সম্পর্কিত সমস্যা)।
রসায়ন: অস্বীকার করব না, কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো বুঝতে যাওয়ার থেকে মুখস্থ করা লাগে, তবে তা হতে হবে নিয়মিত চর্চার মধ্য দিয়ে। তাহলে দেখবে জটিল বিষয়গুলোও আয়ত্তে চলে আসবে। প্রতিটি বিক্রিয়ার মেকানিজম ভালো করে বুঝে পড়ার চেষ্টা করবে এবং আলাদা খাতায় গুছিয়ে লিখে রাখা ভালো। আর জৈব রসায়নকে একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ো। গুরুত্বপূর্ণ যে টপিকগুলো চর্চা করবে, তা হলো: হাইড্রোকার্বন, অ্যালকোহল, জারণ বিজারণ, অম্ল ক্ষারক সাম্যাবস্থা।
সাধারণ কিছু টিপস: বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর প্রশ্নের নিচেই করতে হয় এবং তার জন্য খুব সীমিত জায়গা বরাদ্দ থাকে। ফলে প্রশ্নের উত্তর যথাসম্ভব সংক্ষেপে করাই শ্রেয় এবং ভাষার বাহুল্য প্রয়োগ একেবারেই করা উচিত নয়। শুরু থেকেই তিনটি বিষয়ের জন্য আলাদা খাতা নিয়ে নাও। প্র্যাকটিস খাতা। ব্যতিক্রমী অঙ্কগুলো আলাদা করে তুলে রেখে বারবার চর্চা করো।

প্রতিটি চ্যাপ্টার শেষে প্রশ্নব্যাংক সমাধান করে ফেলবে। মূল বইকে প্রাধান্য দিয়ে আগে শেষ করো। তারপর সহায়ক বই হিসেবে অন্যান্য বইগুলো দেখতে পারো। যে অঙ্কই করো না কেন, সব খাতায় লিখে বারবার প্র্যাকটিস করো। যেকোনো এক লেখকের বই সম্পূর্ণ শেষ করে তারপর ভিন্ন লেখকের বইয়ের অপরিচিত অঙ্কগুলো করা ভালো হবে। আরেকটা জরুরি কথা, বুয়েটের জন্য প্রস্তুতি অন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রস্তুতিতেও কাজে লাগে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।

সামনে আবার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয় নিয়ে চলে আসব ,ভাইয়া রা সে পর্যন্ত ভাল থেক যারা পরীক্ষার্থী তারা ভাল ভাবে পড়া শুনো কর ,কারন এই ২ মাস ই তোমাদের ভবিষ্যতের বিরাট অংশ নির্ধারন করে দেবে।
বুয়েট লোগো 

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

লক্ষ্য যখন কার্জন......

ঢাবি চান্স ও একটি হিসাব